ইসলামাবাদের ‘শত্রু’ বালোচ লিবারেশন আর্মিকে জঙ্গি তকমা ওয়াশিংটনের! আসিম মুনিরের আমেরিকা সফরের সময়ই ঘোষণা

Modern technology has become a total phenomenon for civilization, the defining force of a new social order in which efficiency is no longer an option but a necessity imposed on all human activity.

admin
3 Min Read

বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ)-কে বিদেশি জঙ্গি সংগঠন বলে ঘোষণা করল আমেরিকা। বিএলএ-র সহযোগী ‘মজিদ ব্রিগেড’কেও জঙ্গিগোষ্ঠী হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন। সোমবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো। যদিও ২০১৯ সালেই বিএলএ-কে ‘স্পেশ্যাল ডেজ়িগনেটেড গ্লোবাল টেররিস্ট’ তকমা দিয়েছিল আমেরিকা। ঘটনাচক্রে, পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির দু’মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার আমেরিকা সফরে যাওয়ার পরেই এই বিবৃতি দিল মার্কিন প্রশাসন।

 
 

বালোচ বিদ্রোহীদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই পাকিস্তানি সেনা এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষ দেখা যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটে গত মার্চ মাসে। কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসে হামলা হয় ওই সময়। পুরো ট্রেনেই কব্জা করে নেয় বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিএলএ। ট্রেনে তখন ৪০০ জনের বেশি যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পাক সেনাবাহিনীর কর্মীরাও। পরে অবশ্য পাক সেনাবাহিনীর অভিযানে বালোচ বিদ্রোহীমুক্ত হয় ট্রেন। নিহত হন ২১ জন সাধারণ মানুষ এবং চার জন সেনা। সেনা অভিযানে ৩৩ জন বিদ্রোহীরও প্রাণ যায়।

 

এ অবস্থায় সোমবার বিবৃতি প্রকাশ করে বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিএলএ এবং তার শাখা সংগঠন মজিদ ব্রিগেডকে বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠীর তালিকায় ফেলল আমেরিকা। বিবৃতিতে মার্কিন বিদেশ দফতরের দাবি, ২০১৯ সাল থেকে বিএলএ এবং মজিদ ব্রিগেড বিভিন্ন হামলায় নিজেদের দায় স্বীকার করেছে। পরে ২০২৪ সালে করাচি বিমানবন্দর এবং গ্বদর বন্দরের কাছে আত্মঘাতী হামলারও দায়স্বীকার করেছে বিএলএ। গত মার্চ মাসে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে মার্কিন বিদেশ দফতর। আমেরিকার দাবি, ওই ট্রেন অপহরণের ঘটনায় সাধারণ মানুষ এবং সেনাকর্মী-সহ ৩১ জন নিহত হন।

 

সাম্প্রতিক সময়ে লশকর-এ-ত্যায়বার শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-কেও জঙ্গিগোষ্ঠী বলে চিহ্নিত করেছে আমেরিকা। এই জঙ্গিগোষ্ঠীই পহেলগাঁওয়ে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, বর্তমানে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতিতে তৃতীয় রাষ্ট্রের মধ্যস্থতা নয়াদিল্লি অস্বীকার করার পর থেকেই এই টানাপড়েন ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। অন্য দিকে, সংঘর্ষবিরতিতে আমেরিকার মধ্যস্থতার দাবিকে স্বীকৃতি দেয় পাকিস্তান। এর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করারও প্রস্তাব দেয় ইসলামাবাদ।

এই আবহে গত দু’মাসের মধ্যে দু’বার আমেরিকা সফর সেরে ফেললেন পাক সেনাপ্রধান মুনির। গত জুনে পাঁচ দিনের জন্য আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন তিনি। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও বৈঠক হয় তাঁর। অগস্টে আবার তিনি আমেরিকায় গিয়েছেন। তাঁর সফরের মাঝেই এ বার পাকিস্তান সেনার অন্যতম উদ্বেগের কারণ বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘বিএলএ’কে বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী হিসাবে তালিকাভুক্ত করল আমেরিকা।

 

বালোচিস্তান প্রদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধারাবাহিক ভাবে পাকিস্তানি সেনা এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী। গত মঙ্গলবার রাতেও বালোচিস্তানের নৌশকি জেলায় বিএলএ-র বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত হন এক মেজর-সহ তিন পাক সেনা। তার আগে গত মে মাসে বালোচ বিদ্রোহীদের হামলায় ১৪ জন পাক সেনাকর্মীর মৃত্যু হয়। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলি যথেষ্ট উদ্বেগে ফেলছিল পাকিস্তান সরকার এবং পাক সেনাপ্রধান মুনিরকে। এই আবহে মুনিরের আমেরিকা সফরের মাঝেই বালোচ বিদ্রোহীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল ট্রাম্প প্রশাসন।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *