হারিয়ে গেলেন রাজ্যের আরেকজন তরুণ সাংবাদিক। দীর্ঘ পাঁচ দিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে অবশেষে চিকিৎসকের সব চেষ্টাকে ব্যার্থ করে দিয়ে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করলেন তেলিয়ামুড়া তরুণ সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গেলেন পিতা,মাতা, স্ত্রী এবং ১২ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা তেলিয়ামুড়া জুড়ে শোকের আবহ।
প্রাপ্ত খবর এরকম যে, বিগত প্রায় পাঁচ দিন যাবত আগরতলার ত্রিপুরার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পেটের সমস্যা নিয়ে ভর্তি ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ধরা পরে লিভার জনিত সমস্যা রয়েছে তার। বৃহস্পতিবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে আই.সি.ইউ-তে ভর্তি করা হয় তাকে। অবশেষে শুক্রবার ভোররাতে পৃথিবীর সমস্ত মায়া-মমতা ত্যাগ করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন তিনি। ব্রতীন দীর্ঘদিন যাবত বেশকিছু সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শুক্রবার ব্রতীনের মৃতদেহ আগরতলা থেকে নিয়ে আসা হয় তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রেসক্লাবে।
সেখান থেকে বাইক মিছিল করে নিয়ে যাওয়া হয় ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়ন তেলিয়ামুড়া মহকুমা কমিটি কার্যালয়ের সামনে। সেখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে তেলিয়ামুড়া থানার সামনে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রতীনের বাসভবনে। ব্রতীনের মৃত্যুর খবর পেয়ে আগরতলা থেকে ছুটে আসেন ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়নের রাজ্য কমিটি সম্পাদক তথা আগরতলা প্রেস ক্লাবের সচিব প্রণব সরকার ,নিউজ ভেনগার্ডের এডিটর সেবক ভট্রাচার্য্য, নিউজ টুডের কর্ণধার সুরজিৎ পাল সহ অন্যান্যরা।
অন্যদিকে তেলিয়ামুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়িকা কল্যাণী রায় ব্রতীনের মৃত্যুর খবর শুনে আগরতলা থেকে ছুটে আসেন তেলিয়ামুড়া নেতাজি নগর স্থিত তার বাসভবনে। সেখানে তার মৃতদেহের উপর শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন বিধায়িকা। ব্রতীন ভট্টাচার্য ছিল ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়ন খোয়াই জেলা কমিটির সহ-সভাপতি এবং তেলিয়ামুড়া মহকুমা কমিটির সভাপতি।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক প্রণব সরকার বলেন,, ব্রতীন ছিল ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়নের এক সক্রিয় কর্মী। তার মৃত্যুতে ত্রিপুরার জার্নালিস্ট ইউনিয়নের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে। তার মৃত্যু থেকে তেলিয়ামুড়া মহকুমার সহ সকল সাংবাদিকদের শিক্ষা গ্রহণ করা প্রয়োজন। তেলিয়ামুড়া প্রেস ক্লাবের সম্পাদক পার্থসারথি রায় ও শোক ব্যাক্ত করেছেন।
সি.পি.আই.এম নেতৃত্ব হেমন্তকুমার জমাতিয়া ও ব্রতীনের মৃত্যুর খবর শুনে টিকে থাকতে না পেরে শেষ দেখা দেখার জন্য নেতাজি নগর স্থিত বাসভবন ছুটে আসেন। খুবই দুঃখ পেলেন তিনি ব্রতীনের প্রয়ানে। ব্রতীন ভট্টাচার্যের এই আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা সংবাদ মহল।