মজলিশপুরে ফের সুশান্ত ম্যাজিক। এলাকার বিধায়কের হাত ধরে সিপিআই(এম) ছেড়ে ৫২ পরিবারের ১৯৪ জন গেরুয়া শিবিরে সামিল হয়েছেন। তাদের যোগদানে বিজেপির ভিত আরও শক্তিশালি হবে দল ত্যাগীদের বরণ করে একথা বলেছেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
পাখির চোখ ২০২৩। বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিআই(এম) দলে ভাঙন অব্যাহত। বুধবার পড়ন্ত বিকেলে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উত্তর মজলিশপুর পঞ্চায়েতের ৫২ পরিবারের ১৯৪ জন ভোটার সিপিআই(এম) দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করেন। সিপিআই(এম) দলের প্রতি আস্থা হারিয়ে তারা গেরুয়া শিবিরে সামিল হয়েছেন। এই দলবদলের মাধ্যমে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী তাঁর বিরোধী বামেদের বুঝিয়ে দিলেন তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে বামেরা অপরিহার্য নয়। এদিন এক ঢিলে দুই পাখি বধ করলেন তিনি। এক দিকে দলবদলও করা হল, অপরদিকে শিক্ষাও দেওয়া হল বিরোধীদের।
গত চার বছরে রাজ্য সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কি কি কাজ করেছে তা তুলে ধরতে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র মজলিশপুরে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন। সেই কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নেতা–কর্মীরা তাঁর নেতৃত্ব ও কাজকর্মের প্রতি আস্থা জানিয়ে শাসক দলে যোগদান করে চলেছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিআই(এম) দলের ঘরে ভাঙন শুরু হয়ে যায়। রোজই এখন দেখা যাচ্ছে সিপিআই(এম) দল ছেড়ে শয়ে শয়ে কর্মী–সমর্থক থেকে শুরু করে নেতারা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। আর তাতে এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিরোধী দলগুলোর সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। স্থানীয় নেতৃত্বদের সাথে শলা-পরামর্শ অনুযায়ী বাছাই করে স্বচ্ছ ইমেজের কর্মীদের দলে নেওয়া হচ্ছে।
দলত্যাগীদের দাবি, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সিপিআই(এম) দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করলেও যোগ্য সম্মান পাননি। এজন্যই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৷ দলত্যাগীদের অভিযোগ, বিগত সরকারের আমলে সিপিআই(এম)দলের নেতারা ব্যাপকভাবে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি করতেন। কোনো রকম উন্নয়নমূলক কাজ হতো না গোটা এলাকায়। দুর্নীতি এবং গুন্ডা রাজ চলতো মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে।
মজলিশপুর কেন্দ্রের বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় তাঁরা রাজ্যের উন্নয়নযজ্ঞে শামিল হতে চান। মজলিশপুরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরীর হাতকে শক্তিশালী করতে তারা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেছেন। তাদের বক্তব্য, বর্তমান বিধায়ক দলমত নির্বিশেষে এলাকার মানুষের উন্নয়ন করে চলেছেন। মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের গ্রামগঞ্জের সকল মানুষ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন। তাই বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে শামিল হতেই তাঁরা সিপিআই(এম) ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন।
এদিন দলত্যাগীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের দলে স্বাগত জানিয়ে বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী বলেন, মানুষ বুঝতে পারছে যে সিপিআই(এম) ও কংগ্রেসের মিতালী বা পরিযায়ী পাখী তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের সমস্যা মেটাতে পারবে না। তাই মানুষ বিজেপি দলের প্রতিই আস্থা রাখছেন। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছেন “সবকা সাথ সবকা বিকাশ” তত্ত্বের মাধ্যমে বর্তমানে রাজ্যের মানুষের সমস্যা দূর করতে পারবে একমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার। পাশাপাশি তিনি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের অনুরোধে দেশের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের মানুষকে দুটি করোনার ভ্যাক্সিন প্রদান করেছেন। রাজ্যের যদি কম্যুনিস্টের নেতৃত্বে সরকার থাকত তাহলে বিরোধীদের ভ্যাক্সিন প্রদানে তালবাহানা করত।
মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বিরোধীদের কটাক্ষ করে আরও বলেন বামেরা ক্ষমতায় থাকলে বিরোধীদের টাকার বিনিময়ে ভ্যাক্সিন দেওয়া হত। কিন্তু বিজেপি এই ধরনের নোংরা রাজনীতি করেনা। তাই দল মত নির্বিশেষ সকলকে ভ্যাক্সিন দিয়েছে।পাশাপাশি তিনি বলেন, রাজ্যের মানুষ যেহেতু দুটি ভ্যাক্সিন নিয়েছেন তাই তাদেরকে এখন আর মাস্ক পরিধান করতে হয়না।
এফভিও/ এলাকার বিধায়ককে কাছে পেয়ে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি কর্মীদের মধ্যে যেন আলাদা উদ্যম প্রত্যক্ষ করা যায়। বিজেপি কর্মীরা যেন বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছেন।