প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ১৪ এপ্রিল প্রতাপগড় স্কুল মাঠে হবে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলা। এই পূজাকে ঘিরে সেজে উঠছে স্কুল মাঠ। ১০০ বছর ধরে চড়ক পূজা হচ্ছে এই স্কুলে বলেছেন পূজার প্রধান সন্ন্যাসী হেমন্ত ঋষি দাস।
বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণের একটি হল ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা। প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে এই পূজা হয়ে থাকে। রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের সঙ্গে ১৪ এপ্রিল প্রতাপগড় বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতাপগড় ইংলিশ মিডিয়াম হাই স্কুল মাঠে হবে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা। এই পূজাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই সেজে উঠছে স্কুল মাঠ।
১০০ বছর ধরে চড়ক পূজা হচ্ছে এই স্কুলে বলেছেন পূজার প্রধান সন্ন্যাসী হেমন্ত ঋষি দাস। বুধবার নিউজ ভ্যানগার্ডের প্রতিনিধির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে একথা বলেছেন ৮১ বছরের এই প্রবীন সন্ন্যাসী। তিনি নিজেই ৪০ বছর ধরে এই পূজা করছেন। তার আগে দুই সন্ন্যাসী পূজা করেছেন।
প্রধান সন্ন্যাসী হেমন্ত ঋষি দাস বলেন,ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজার একটি পৌরানিক কাহিনী রয়েছে। ভগবান রামের সময় থেকেই এই পূজার প্রচলন। দেবাদীদেব মহাদেব পৃথিবীতে তার নাম প্রচারের জন্য এই পূজা করার জন্য রাম চন্দ্রকে স্বপ্নে আদেশ দিয়েছেন। নদীর তীরে থাকা সন্ধ্যা বেতের ঝাঁর থেকে বেত সংগ্রহ আম অথবা নিম কাঠ দিয়ে পিলার তৈরি করে নগরবাসীর কাছ থেকে সিধা নিয়ে চড়ক পূজা করার আদেশ দিয়েছিলেন মহাদেব। সেই থেকেই পৃথিবীতে চড়ক পূজার প্রচলন।
চড়ক পুজায় সন্ন্যাসীরা আগুনের লেলিহান শিখার উপর দিয়ে হাঁটেন এবং পিঠে লোহার রড দিয়ে চড়ক গাছের চারিদিকে ঘুরেন। এটা কি করে সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তরে হেমন্ত ঋষি দাস বলেন,এই সব কাজ একমাত্র মন্ত্র শক্তির মধ্য দিয়ে হয়ে থাকে। যারা এই কাজ করছেন এই সন্ন্যাসীরা এক মাস ধরে নিরামিষ আহার করেন। নিজেরা নিষ্ঠা সহকারে দিন কাটায়। কোন ধরনের অনিয়ম হলে আগুনের লেলিহান শিখার মধ্য দিয়ে হাঁটলে তার পা পুড়ে যাবে। পাশাপাশি তিনি বলেন চড়ক পূজার আগের দিন রাত একটা নাগাদ ১৮ জন সন্ন্যাসী মিলে শ্মশানে পূজা দেবেন। দেবাদীদেব মহাদেবকে চড়ক পূজায় আসার আমন্ত্রণ জানাবেন।
চড়ক পূজা ও মেলাকে ঘিরে নতুন ভাবে সেজে উঠছে প্রতাপগড় স্কুল মাঠ। ইতিমধ্যেই স্কুলের বাইরে দোকান পাট বসার প্রস্তুতি চলছে। চড়ক পূজাকে ঘিরে প্রতাপগড়ে আগাম উৎসবের রব।