অহংকারে আজোও মাটিতে পা পরে না।ক্ষমতা হারালেও অহংকার কমেনি সিপিআই(এম)এর। অহংকারী সিপিআই(এম) নিজের ফেইসবুক পেইজ থেকে অসত্য তথ্য পরিবেশন করে রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমকে আবারোও কলঙ্কিত করতে চাইছে । আসলে অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিতের দাপাদাপিতে আজও সিপিআই(এম)দিশেহারা। তবে দিশেহারা হলেও নিজেদের বেলায় এখনোও ষোল আনা, পরের বেলায় অষ্টরম্ভা।
সিপিআই(এম)ত্রিপুরা নামের একটি ফেইসবুক পেইজে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ২০মিনিটে একটি ‘রেড ভিউ’ নামক ভিডিও আপলোড করা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশান দেওয়া হয় ‘বিজেপি জোট শাসনে গুরুত্বহীন ন্যাশানাল প্রেস ডে!’ কিন্তু এই শিরোনামের আড়ালে রাজ্যের বৃহত্তর অংশের সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের নেতৃত্বকে গালাগালি দেওয়াই ছিল সিপিআই(এম)ত্রিপুরা পেইজটির মূল উদ্দেশ্য। আসলে কয়লার রং যায়না ধুলে, সিপিআই(এম) এর স্বভাব যায়না মলে। প্রতিবছর ১৬ই নভেম্বর আগরতলা প্রেস ক্লাব ও ICA দপ্তর সম্মিলিতভাবে ন্যাশানাল প্রেস ডে প্রতিপালন করে। এটাই রীতি। কিন্তু এবছর পুর ও নগর পঞ্চায়েতের নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হওয়ায় ন্যাশানাল প্রেস ডে’র নির্ধারিত অনুষ্ঠানটি পিছিয়ে ৩০এ নভেম্বর করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। অথচ সিপিআই(এম) ত্রিপুরার ধ্বজাধারীরা কোনরূপ তথ্য সংগ্রহ না করেই ন্যাশানাল প্রেস ডে পালিত না হওয়ায় গণতন্ত্র বিপন্ন বলে সত্যকে মিথ্যা বানানোর পুরনো অভ্যাসকেই বহাল রেখেছেন। প্রেস ডে নিয়ে কুমিড়ের কান্না। সংবাদমাধ্যমকে কুক্ষিগত করতে সিদ্ধহস্ত সিপিআই(এম) আজ সংবাদমাধ্যমের গণতন্ত্র নিয়ে নিবেদিত প্রান। বেড়াল বলে মাছ খাব না।রাজ্যের মানুষ কি ভুলে গেছেন বিগত বাম রাজত্বে সংবাদমাধ্যমকে কীভাবে রাজনীতিকরনের জাতাকলে পিষে মারা হয়েছিল। সঠিক সংবাদ যা কিনা বামেদের পক্ষে যায়না এমন সংবাদ পরিবেশিত হলেই নেমে আসতো প্রশাসনিক খাড়া। অপছন্দের বৈদ্যতিন সংবাদমাধ্যমগুলোকে শ্বাসরুদ্ধ করার জন্য কন্ট্রোলরুমগুলোকে দিয়ে পর্বতসম আর্থিক বোঝা চাপিয়ে দিত বামেরা।
নিউজ ভ্যানগার্ড সহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে বছরে ১২ থেকে ১৮ লাখ টাকা বলপূর্বক আদায় করতো কন্ট্রোলরুমগুলো।অথচ সিপিআই(এম)এর দু-দুটি বৈদ্যতিন সংবাদমাধ্যমকে কোনোদিন এক টাকাও দিতে হয়নি। এমনকি আজও তারা বিনে পয়সায় চ্যানেল চালাতে চায়। মামার বাড়ির আবদার। তাদের জানা উচিৎ এক মাঘে শীত কখনো যায়না। আজ তারা বড় বড় নীতিকথা আওরায়। অতি সম্রতিকালে দুটি সংবাদমাধ্যমের উপর দৈহিক আক্রমণ চালিয়েছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা। নিউজ ভ্যানগার্ড সহ রাজ্যের গণতান্ত্রিক সংবাদ জগৎ সেই পাশবিকতাকে কোনভাবেই সমর্থন করেনি। তাই বলে সিপিআই(এম) আমলের সব পাপ কি এত তাড়াতাড়ি ধুয়ে যাবে?? ভুলে গেছেন সংবাদমাধ্যমের অফিসে পুলিশ পাঠানো, কথায় কথায় চ্যানেলের লাইন বন্ধ করে দেবার কথা। আজকেও কন্ট্রোলরুমের শর্ত মেনে চললেও কারো লাইন কেটে দেওয়াকে নিউজ ভ্যানগার্ড সমর্থন করেনা। তাই বলে শর্ত না মেনে বিনে পয়সায় শুধুমাত্র রাজনৈতিক সিল নিয়ে কেউ চ্যানেল চালাতে আসবে সে কি মেনে নেওয়া যায়!? সিপিআই(এম)ত্রিপুরা পেইজ থেকে রাজ্যের গনতান্ত্রিক সাংবাদিকদের গালিগালাজ করে গেরুয়া রাজনীতির পক্ষ্যভুক্ত করে দেওয়া হয়েছে যাকিনা সিপিআই(এম)এর চিরাচরিত অভ্যাস। একসময় ছিল সিপিআই(এম)এর অভ্যন্তরে কেউ বিরোধী আওয়াজ তুললে তাকে পিডিএফ (PDF) বলে আখ্যা দেওয়া হতো। দলের বাইরে সিপিআই(এম)সরকারের সমালোচনা করলে তাকে কংগ্রেস ষ্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হতো। অধুনা সিপিআই(এম) বিরোধিতা মানেই সে বিজেপি (BJP)। অথচ নিজ পার্টি পত্রিকার সাংবাদিকরা যে শুধু সিপিআই(এম) পার্টির গুণকীর্তন করে চলে তাদের কাছে সেই সাংবাদিকরাই হচ্ছেন আদর্শ সাংবাদিক। নিজের বেলায় ষোল আনা।
অথচ নিউজ ভ্যানগার্ড’এর মত সংবাদমাধ্যমগুলো সম্প্রতিকালে যুব-উৎসব কেলেঙ্কারি ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ধারুরকরের আর্থিক কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে ব্লক লেবেল দুর্নীতি, যেখানে যেখানে মানুষ অত্যাচারীত হয়েছে সবকটা সংবাদই তুলে ধরেছে। সিপিআই(এম)এর দলীয় মুখপত্র কিংবা মুখপত্র ধর্মী বৈদ্যতিন সংবাদমাধ্যমগুলো কি বাম আমলে কখনো কেলেঙ্কারি কিংবা অত্যাচারের সংবাদ তুলে ধরেছিল? বরং উল্টো সেগুলোকে ধামাচাপা দিয়েছে। অথচ তারাই নাকি আসল সাংবাদিক, আর বাকিরা ……।অহংকারী – দ্বিচারিতা আর কাকে বলে! আর এই ভণ্ডামি যুগের পর যুগ ধরে স্বযত্নে লালিত পালিত হয় বলেই আগাম খবর থাকা সত্বেও ভাংচুরের আগে নিজেদের পার্টি অফিস খালি করে পালিয়ে গিয়েছিল মেলার মাঠের সেই কাপুরুষের দল। আজ এসেছে নীতিকথা শুনাতে। অযথা খোঁচাখোচিতে মত্ত। ঢিল দিলে পাটকেল খেতে হবে। নিউজ ভ্যানগার্ড সর্বদা জেনে বুঝে সঠিক যুক্তি রেখে বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তবেই সংবাদ পরিবেশন করে। প্রেস ডে সম্পর্কে অসত্য তথ্য পরিবেশন করে অযথা খোঁচাখোচি করলো সিপিআই(এম) ত্রিপুরা। প্রেস ডে নিয়ে সে সময় দলবাজি হতো, আজ অন্তত দলবাজি হয় না।
অথচ সেদিনকার দলবাজি করা সিপিআই(এম)ত্রিপুরা আজকের দিনের সাংবাদিক নেতাদের প্রশ্ন করলো কেন তারা নিশ্চুপ! প্রেস ডে সঙ্ক্রান্ত তথ্যই যেখানে ভুলেভরা সেইখানে সরবতা কিংবা নিরবতার কি আছে?! তবে সে প্রশ্ন যদি করতে হয় তাহলে তো সিপিআই(এম)পার্টির ধামাধরা সমীর যুগলকে করা উচিৎ। তারা কেন সেই সংগঠন থেকে বেড়িয়ে আসছেন না? তারাও তো সেই সংগঠনেরই নেতৃত্ব। অবশ্য সিপিআই(এম)এর কাছে এখন লজ্জা টজ্জার বালাই নেই। আসলে সিপিআই(এম) এর পুরোনো অভ্যাস অনুযায়ী আজও যত দোষ নন্দ ঘোষ, নিজেরা ধোঁয়া তুলসী পাতা। ১৮তে শিক্ষা হয়নি, শিক্ষা পাবার হয়তো আরোও বাকি আছে। তবে যদি কমে অহংকার আর দ্বিচারিতা।