চাকুরির পুনর্বহালের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্ত ১০৩২৩ শিক্ষকদের মহাকরণ অভিযান। আন্দোলনে শামিল শিশু ও অভিভাবকরা। সার্কিট হাউজ সংলগ্ন এলাকায় মিছিলে পুলিশের বাঁধা দান। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মহাকরণে চিঠি। উত্তর না পেয়ে পুনরায় গণঅবস্থান। রাজ্যব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি।
১) চাকুরির দাবিতে ১০৩২৩ শিক্ষকদের মহাকরণ অভিযান।
২) আন্দোলনে শামিল শিশু ও অভিভাবকরা।
৩) সার্কিট হাউজে মিছিলে পুলিশের বাঁধা দান।
৪) বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের।
চাকুরি পুনর্বহালের দাবিতে মঙ্গলবার মহাকরণ অভিযানে সামিল হলেন ক্ষতিগ্রস্ত ১০৩২৩ শিক্ষকরা। এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন শিক্ষকদের পরিবারের শিশু ও অভিভাবকরা। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এদিন রবীন্দ্র শত বার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণে জমায়েত হয়ে সেখানে প্রয়াত মন্ত্রী এন সি দেব বর্মার প্রতি কৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনের পর শুরু হয় মিছিল। বিভেদ ভুলে সব সংগঠন এক মঞ্চে এসে মহাকরণ অভিযানে শামিল হয়েছেন। আন্দোলনে রাজ্যের সব মহকুমা থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকরা অংশ গ্রহণ করেন। স্বভাবতই মিছিলে ভিড় ছিল প্রত্যক্ষ করার মত।
মিছিল রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে সার্কিট হাউজ সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছতেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আন্দোলন কারীদের বাঁধা দেয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে মহাকরণে চিঠি পাঠায়।
তবে ক্ষতিগ্রস্ত ১০৩২৩ শিক্ষকদের অভিভাবকেরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবার ও তাদের চাকুরি ফিরিয়ে দেবার অনুরোধ করেন। নিজের এক মাত্র ছেলের চাকুরি ফিরিয়ে দেবার অনুরোধ করেন এক অভিভাবক।
এক অভিভাবক বলেন ছেলের চাকুরি চলে গেছে। এখন বৃদ্ধ বয়সে যে দুরাবস্থার মধ্যে দিন যাপন করছেন তা সহ্য করার মত নয়।
মহাকরণ অভিযান সম্পর্কে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক কমল দেব বলেন, গত২২ ডিসেম্বর মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা তাদের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সেই আলোচনার পর তিনি জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এই বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে তাদের জন্য একটি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হবে সরকার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এখন পর্যন্ত কোন ধরনের বার্তা দিচ্ছে না। বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। এরপরই শুরু হবে নির্বাচনী রণযুদ্ধ। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জবাব চাইতে মঙ্গলবার মহাকরণ অভিযানে শামিল হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকরা আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করবেন। আর যদি সরকার এই বিষয়ে কোন ধরনের সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয় তাহলে রাজ্য ব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকরা।
এদিকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সার্কিট হাউস বসে মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে কোন আশ্বাস না পেয়ে আবার মিছিল করে সিটি সেন্টারে প্রাঙ্গণে এসে গন অবস্থানে বসলেন ১০৩২৩ শিক্ষকরা। যতক্ষণ না পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী চাকরি নিয়ে কোন ধরনের আশ্বাস না দেবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের গনঅবস্থান চলবে সিটি সেন্টার প্রাঙ্গণে বলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ সাহা।
বিধানসভা নির্বাচন প্রায় আসন্ন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত ১০৩২৩ শিক্ষকদের সম্পর্কে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেটাই দেখার।