১৮ মার্চ বিশ্ব ঘুম দিবস। এবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শ্লোগান ঘুমই জীবন : গুনগত ঘুমে সুস্থ্য মন, সুখী পৃথিবী ।শারীরিক, মানসিক ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম ঠিক রাখতে জীবনের মোট সময়ের তিন ভাগের এক ভাগ ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। আট ঘণ্টা ঘুম মস্তিষ্কের কার্যক্রমকে সবচেয়ে ভালো রাখে। আমরা যখন ঘুমিয়ে পড়ি, তখন এমন কিছু কার্যক্রম চালু হয়, যেগুলো জীবনের জন্য খুবই জরুরি। শরীর ও মনের ঠিকভাবে ফাংশনের জন্য, ‘কোয়ালিটি লাইফ’-এর জন্য প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
প্রতি বছর ১৮ মার্চ বিশ্ব ঘুম দিবস পালিত হয়।এ নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা জোরদিয়েই বলে থাকেন, ঘুমই একজন মানষকে সুস্থ্য রাখতে পারে। গুনগত মানের ঘুম এনে দেবে সুস্বাস্থ্য এবং প্রশান্তি। নিয়ম করে ৮ ঘন্টা ঘুমানো হলে শারীরিকভাবে ফিট থাকা সম্ভব। পাশাপাশি নানা ধরণের অসুখ-বিসুখ থেকেও মিলবে মুক্তি। ঘুমের ব্যাঘাত ভয়ানক রোগ-ব্যাধী ডেকে আনতে পারে! রোগবালাইকে আমন্ত্রন জানাতে না চাইলে, অধিক রাত জেগে মোবাইল-টিভি বা কম্পিউটার কাজ করার অভ্যস্তটা ছাড়তে হবে। ঘুমাতে যাবার অন্তত দু’ঘন্টা আগে খেতে হবে এবং ব্লু লাইট তথা মোবাইল-কম্পিউটার চালানো বন্ধ রাখতে হবে। এ সংক্রান্ত গবেষক ও বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানি এবং অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া বাংলাদেশ’ এর জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু নিউজ ভ্যানগার্ডকে বলেন,
ভালো থাকার জন্য ভালো ঘুম হওয়া একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অনেকেই আছেন যাদের মোটেও ভালো ঘুম হয় না। নিদ্রাকালীন শ্বাসরুদ্ধতা বা স্লিপ অ্যাপনিয়া। অ্যাপনিয়া মূলত একটি গ্রিক শব্দ। যার অর্থ শ্বাসহীনতা। স্লিপ অ্যাপনিয়া তিন রকমের, নাক ও গলায় বাধাজনিত . মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত এবং মিশ্র ধরণের।অ্যাপনিয়া অর্থ শ্বাসহীনতা। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য নষ্ট হয়। বড়দের ৫ ভাগ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত। শিশুদের মধ্যে এ হার ২-৩ নিদ্রাকালীন শ্বাসরুদ্ধতা বা স্লিপ অ্যাপনিয়া। তিন প্রকারের মধ্যে বাধাজনিত অ্যাপনিয়া রোগী সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। অ্যাপনিয়া চিকিৎসা না করা হলে রোগীর শ্বাস বারবার কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে। কখনো সারারাত শতবার এমন হয়। কখনো আবার এক-দু’মিনিটের জন্য হতে পারে। মস্তিষ্কে কোনো কারণে অ্যাপনিয়া হলে যেসব মাংসপেশী শ্বাস নেওয়ার কাজ করে তারা সংকেত পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকে।প্রতিবার অ্যাপনিয়া হলে মস্তিষ্ক অল্প সময়ের মধ্যে রোগীকে জাগিয়ে দেয়। উপসর্গ : অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপে উচ্চশব্দে নাক ডাকে। নাক ডাকার ধরনটি হয় অস্বাভাবিক। থেমে থেমে নাক ডাকে। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে দিবাভাগে মাত্রাতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব। স্মৃতি বিভ্রম। হতাশা, বদমেজাজ, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা, মোটা হয়ে যাওয়া, মানসিক অসুস্থতা বিবাহ বিচ্ছেদ, ক্যান্সার, আয়ু কমে যাওয়া, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং হার্টের নানা অসুখ ইত্যাদি।
চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে, অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা; অ্যালকোহল, ধূমপান, অতিরিক্ত চা কফি পান ও ঘুমের ওষুধ সেবন এড়িয়ে চলা; এক পাশে কাৎ হয়ে শোবার অভ্যাস করা। এ ছাড়া নাক বন্ধ থাকার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। সিপিএপি বা কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেসার বা একনাগাড়ে শ্বাসতন্ত্রে বায়ুর চাপ বাড়িয়ে রাখা যান্ত্রিক ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থা বেশ কার্যকর।
শারীরিক, মানসিক ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম ঠিক রাখতে জীবনের মোট সময়ের তিন ভাগের এক ভাগ ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। আট ঘণ্টা ঘুম মস্তিষ্কের কার্যক্রমকে সবচেয়ে ভালো রাখে। আমরা যখন ঘুমিয়ে পড়ি, তখন এমন কিছু কার্যক্রম চালু হয়, যেগুলো জীবনের জন্য খুবই জরুরি। শরীর ও মনের ঠিকভাবে ফাংশনের জন্য, ‘কোয়ালিটি লাইফ’-এর জন্য প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
ঢাকা থেকে ঋদ্ধিমানের রিপোর্ট, নিউজ ভ্যানগার্ড