রোমাঞ্চকর জয় ত্রিপুরার। পাল্টা জবাবে পাটকেল ছুঁড়ে হঠাৎ জ্বলে ওঠে দুর্দান্ত জয় হাসিল করে নিল ত্রিপুরা। কোচবিহার ট্রফি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের খেলায় ত্রিপুরার সামনে বিহারের বিরুদ্ধে জয়ের হাতছানি ছিল। প্রথম ইনিংস ৭০ রানে শেষ হয়ে যাওয়া দল বিহার দ্বিতীয় ইনিংসে এতটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, সত্যিই অভিনন্দন যোগ্য। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল বিহার। অনেকের মতে বিহারের প্রথম ইনিংসের ৭০ রান, ত্রিপুরার সামনে এক প্রকার প্রলোভন ছিল। কেননা, ১৯৩ রানে প্রথম ইনিংস গুটিয়ে নেওয়া দল ত্রিপুরা, দ্বিতীয় ইনিংস ১৪৫-এ শেষ করে নেওয়ার পরিস্থিতি দেখে অনেকেই ত্রিপুরা দলকে অতি আত্মবিশ্বাসী বলে কটাক্ষ করেছিলেন। মূলতঃ অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে যা হবার তাই হলো।
বিহার দলের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে ত্রিপুরা। ৮ রানের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে পুরো ৬ পয়েন্ট অর্জন করে নিলো রাজ্যদল। বৃহস্পতিবার ম্যাচের অন্তিম দিনের ৯০ ওভারের খেলায় বিহারের প্রয়োজন ছিলো ৭০ রানের। হাতে উইকেট ৬টি। এই অবস্থায় ত্রিপুরার বোলারদের যতটুকু জ্বলে ওঠার প্রয়োজন ছিল, শুরুতে তা সম্ভব হয়নি। অধিনায়ক আনন্দ ভৌমিক সকলের সঙ্গে পরামর্শ করে বোলার অদল-বদলের মাধ্যমে কুমার শ্রেয়-র (৪০ রানে) উইকেটটি দখল নিতেই বিহার শিবিরে কালো মেঘ দেখা দেয়। উইকেট আঁকড়ে থাকা কৃত সাহনির সঙ্গে হর্ষিত কিছুটা সঙ্গ দিলেও ত্রিপুরার দুর্লভের বোলিং ঘূর্ণিতে হর্ষিত আউট হলে, ম্যাচ চলে আসে ত্রিপুরার লাগামে।
২৫৫ থেকে ২৬০ অর্থাৎ পাঁচ রানের মধ্যে পাঁচটি উইকেটের পতন ঘটিয়ে ত্রিপুরার বোলাররা বাজিমাৎ করে দিয়েছে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। উল্লেখ্য, পুরো ম্যাচের প্রেক্ষাপটে বলা যায় সোমবারের শুরুতে টস জিতে বিহার প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ত্রিপুরাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানালে ৭৬.১ ওভার খেলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ত্রিপুরা ১৯৩ রান সংগ্রহ করে। জবাবে বিহার দিনের শেষে চার উইকেটে ১৭ রানে থামে। দ্বিতীয় দিনে বিহারের প্রথম ইনিংস মাত্র ৭০ রানে ফুরিয়ে গেলে ত্রিপুরা ১২৩ রানে লিড পায়। অতঃপর দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শুরু করে দিনের শেষে ত্রিপুরা ৭ উইকেটে ১৩৪ রানে থামে। বুধবারে ত্রিপুরার শেষাংশ নামমাত্র খেলে ১৪৫ রানে দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে নিলে, পাল্টা জবাবে বিহার যেন অগ্নিমূর্তি ধারণ করে।
দিনের শেষে ৮১ ওভার খেলে চার উইকেটে ১৯৯ রানে থামলেও বৃহস্পতিবারে অন্তিম দিনের প্রথম বেলায় ২৮.৩ ওভার খেলে ৬১ রান যোগ করতেই অবশিষ্ট ৬ উইকেট হারিয়ে ইনিংস গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়। ত্রিপুরার সৌরভ দাস ৬২ রানে ও সন্দীপ সরকার ৯১ রানে তিনটি করে উইকেট এবং দুর্লভ রায় ১৯ রানে ২টি উইকেট তুলে নেয়। অর্কজিৎ দাস এবং আনন্দ ভৌমিক পেয়েছে একটি করে উইকেট।